হেলাল উদ্দীন (মিঞাজী) নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তের মিযানমারের ভিতরে ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৮ ও ৪৯ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলারসংলগ্ন এলাকায় ফের শুরু হয়েছে, তীব্র গোলাগুলি। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাত থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে চলেছে। এতে সীমান্তবর্তী চাকঢালা, ঘুমধুম ও দৌছড়ি এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে চাকঢালা সীমান্তে আবারও প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে আকাশ কেঁপে ওঠে। এতে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক পরিবার নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। সীমান্ত এলাকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছেদ পড়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, মিয়ানমারের ভেতরে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (AA) এর বিরুদ্ধে অন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলছে তীব্র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব।
সংঘর্ষে ভারী অস্ত্রের ব্যবহার এবং টানা গোলাগুলির ফলে পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিয়েছে, যার প্রতিধ্বনি এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা জনপদে।
চাকঢালা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, শফিউল আলম ও আবদুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ৫০ নম্বর পিলার থেকে ৪৮ নম্বর পিলার এলাকায় থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ তারা শুনেছেন। তাদের দাবি, বিদ্রোহী আরসা বাহিনী প্রতিদ্বন্দ্বী একটি দলের 'বেন্ডুলা' নামের ঘাঁটি দখলের চেষ্টা চালায়, তবে টানা বর্ষণের কারণে তা ব্যর্থ হয়। যদিও এখনো হতাহতের কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে পরিস্থিতির ভয়াবহতায় সীমান্তবাসীর মাঝে উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের বিষয়টি আমরা অবগত। শনিবার সকাল ১১টার দিকে একটি গুলির খোসা বাংলাদেশ সীমানার ভেতরে এসে পড়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়।”
তিনি আরও জানান,“পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উপজেলা প্রশাসন ও সীমান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৪ বিজিবি। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পাশাপাশি ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”